নড়াইল একটি প্রাচীন জনপদ। প্রায় ১০ লক্ষ বছর পূর্বে প্লায়স্টোসিন যুগে সাগরবক্ষে যে বিশাল দ্বীপময় জলাশয়ের সৃষ্টি হয়েছিল তার মধ্যে যশোর- নড়াইলের অবসহান। প্রায় ২৫ হাজার বছর পূর্বে বৃহত্তর যশোরের ভূভাগ গঠিত হয় এবং জনবসতি গড়ে উঠে। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগে রুপরাম দত্ত কিসমত কুড়িগ্রামের যে অঞ্চলে জমিদার বাড়ী নির্মাণ করেন তা ক্রমান্বয়ে নড়াল>নড়াইল নাম পরিগ্রহ করে। রুপরামের পুত্র কালিশংকর রায়ের আমলে বিভিন্ন তালুক ক্রয়ের ফলে বিশাল জমিদারী প্রতিষ্ঠিত হয় ।
১৭৫৭ সালে পলাশীর আম্রকাননে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পর এদেশে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শাসন চালু হয়। ১৭৭৬ সালে ব্রিটেনের রাজস্ব ব্যবসহার আদলে যশোর কালেক্টরেট সহাপন করা হয়। বৃহত্তর খুলনা ও ফরিদপুরের একাংশ যশোর জেলার অন্তর্ভৃক্ত ছিল। পরবর্তীতে প্রভাবশালী নড়াইলের জমিদারদের পৃষ্ঠপোষকতায় পশ্চিম মহিষখোলা মৌজায় ১৮৬১ সালে পরিত্যক্ত নীল কুঠিতে নড়াইল মহকুমা সহাপিত হয় । নড়াইল মহকুমার কার্যক্রম শুরুর সময় খুলনা মহকুমার বড় কালিয়া থানা নড়াইলের অন্তর্ভূক্ত হয়। নড়াইল সদর, লোহাগড়া এবং কালিয়া থানা নিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থানা এবং যশোরের অভয়নগর থানা নড়াইল মহকুমা ভূক্ত হয়। ১৯৩৪ সালে প্রশাসনিক সীমানা পুনগঠনের সময় অভয়নগরের পেড়লী কালিয়া উপজেলায় এবং বিছালী ও শেখহাটি ইউনিয়ন কর্তন করে নড়াইল সদর থানার অন্তর্ভূক্ত করা হয়। অভয়নগরকে পুনরায় যশোরের সংগে সংযুক্ত করা হয় ।
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময় নড়াইল মহকুমায় নড়াইল সদর, আলফাডাঙ্গা, লোহাগড়া ও কালিয়া থানা ছিল। ১৯৬০ সালে আলফাডাংগা থানাকে ফরিদপুর জেলাভূক্ত করা হয়। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন পরিচালিত সরকার প্রতি মহকুমাকে জেলায় পরিনত করে প্রতিজেলায় একজন গভর্নর এবং একজন সেক্রেটারী নিয়োগ এর উদ্যোগ গ্রহণ করেন । জেলা পর্যায়ে গভর্নরের শাসন চালু হওয়ার আগ মুহূর্তে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে নিহত হওয়ায় নতুন জেলা সৃষ্টির প্রয়াস স্তিমিত হয়। পরবর্তীতে প্রশাসনের পুর্নগঠনের কারণে ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ নড়াইল জেলায় রুপান্তরিত হয় ।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS